একসময় পাবনার ঈশ্বরদীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা হল ছিল ‘রাজু সিনেমা হল’। উপজেলার গোকুলনগরে গ্রামীণ পরিবেশে সিনেমা হলটির নানন্দিক স্থাপনা দেখে দর্শকরা মুগ্ধ হতেন। এখানে ঈশ্বরদী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা নাটোরের লালপুর, বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম ও পাবনার আটঘরিয়াসহ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ সিনেমা দেখতে আসতেন। কালের বিবর্তনে সিনেমা হলটি এখন মাদরাসায় রূপান্তরিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালের দিকে বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক কমে গেলে রাজু সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যেই হলটি বন্ধ ঘোষণা করতো। আবার দর্শকপ্রিয় কোনো সিনেমা এলে হল আবার চালু করা হতো। এভাবে চলার পর ২০১৯ সালের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে হলের মালিক এটি বন্ধ করে দেন।কিছুদিন এটি ফাঁকা থাকার পর স্থানীয় উম্মুল কুরআন একাডেমি মাদরাসা সিনেমা হল ভবন ভাড়া নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করে। সেই থেকে ‘রাজু সিনেমা হল’ এখন মাদরাসা।
স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘একসময় দূর-দূরান্ত থেকে এখানে মানুষ বিনোদনের জন্য আসতেন। হাজার হাজার নারী-পুরুষের সমাগত হতো। মানুষ আনন্দে-উৎসবে মেতে উঠতেন। সিনেমা হলের ব্যবসা ভালো হলে হয়তো এটি আজ মাদরাসা হতো না। তবে সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে। এটিও ঠিক তাই।’
সুজন হোসেন নামের আরেকজন বলেন, ‘আশির দশকে যাত্রা শুরু করা এ সিনেমা হলে মানুষ সিনেমা দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়তো। আগে দেখতাম মানসম্মত সিনেমা হলে এলেই মানুষ লাইন ধরে টিকিট কাটতো। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয়তার ভাটা পড়ায় অন্যান্য হলের মতো রাজু হলও বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু এটিই নয়, উপজেলার সাতটি সিনেমা হলের সব কয়টি বন্ধ হয়ে গেছে।’
উম্মুল কুরআন একাডেমির পরিচালক রুমন হোসাইন বলেন, ‘রাজু সিনেমা হলের ভবন দীর্ঘদিন ফাঁকা পড়ে ছিল। ভবন মালিকের সঙ্গে আলোচনা করে ভাড়া নিয়েছি। এখানে ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। আগে এটি সিনেমা হল ছিল, নাচ-গান হতো। এখনতো এটি কোরআনের শিক্ষালয়। এখানে প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ কোরআনের শিক্ষা ও আল্লাহর ইবাদত করা হয়।’